খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর এবার পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ধাপে এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যজুড়ে শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকা সংক্রান্ত শুনানির কাজ। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই শুনানির মাধ্যমে ভোটার তালিকার ত্রুটি, নাম সংযোজন বা বাদ যাওয়ার বিষয়গুলি যাচাই করা হবে।
খসড়া তালিকা প্রকাশের পরই শুনানির জন্য নোটিশ পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। বুথস্তরের আধিকারিকরা, অর্থাৎ বিএলও (BLO)-রাই বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হাতে নোটিশ তুলে দিচ্ছেন। কমিশনের লক্ষ্য—এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় যেন কোনও ধরনের গাফিলতি না থাকে।

কারা ডাক পাবেন শুনানিতে?
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে ২০০২ সালের ভোটার তালিকার সঙ্গে যাঁদের নামের ম্যাপিং করা সম্ভব হয়নি, মূলত তাঁদেরই শুনানির জন্য ডাকা হবে। এমন ভোটারের সংখ্যা রাজ্যে প্রায় ৩২ লক্ষ বলে দাবি কমিশনের।
ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ লক্ষ নোটিশ ছাপানোর কাজ শেষ হয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যেই বাকি সমস্ত নোটিশ ছাপানো শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী কমিশন। নোটিশ দেওয়ার সময় ভোটারের কাছ থেকে সই করিয়ে একটি রিসিভ কপি রাখা হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে কোনও বিভ্রান্তি না থাকে।
শুনানি চলাকালীন কড়া যাচাই
শুনানির দিনেও ভোটারদের সই করাতে হবে বলে জানানো হয়েছে। কমিশন সূত্রে খবর, দুটি সই মিলিয়ে দেখে নিশ্চিত করা হবে যে একই ব্যক্তি হাজির হয়েছেন কি না। এই অতিরিক্ত যাচাইয়ের মাধ্যমে ভুয়ো উপস্থিতি বা পরিচয় সংক্রান্ত বিভ্রান্তি এড়াতে চাইছে কমিশন।


কোথায় হবে শুনানি?
শুনানির জায়গাও ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত করা হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, ব্লক স্তরে শুনানি হবে।
শুনানির সম্ভাব্য স্থানগুলির মধ্যে রয়েছে—
-
বিডিও (BDO) অফিস
সবচেয়ে বেশি বার পড়া হয়েছে:
খসড়া ভোটার তালিকায় নাম থাকলেই নিশ্চিন্ত নয়, শুরু কমিশনের কড়া যাচাই, শুনানিতে ডাক পড়তে পারে লক্ষাধিক ভোটারের -
বিভিন্ন সরকারি ভবন
-
সরকারি স্কুল ও কলেজ
-
পুরসভার বিল্ডিং
স্থানীয় সুবিধা অনুযায়ী শুনানির কেন্দ্র নির্ধারণ করা হবে।
মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ ও ট্রেনিং
শুনানির পুরো প্রক্রিয়ার উপর নজর রাখতে প্রায় ৪ হাজার মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন। তাঁদের নিয়োগপত্র ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। মূলত শুনানির কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তার তদারকির দায়িত্বে থাকবেন তাঁরা।
এছাড়া এই আধিকারিকদের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২৪ ডিসেম্বর নজরুল মঞ্চে দু’দফায় ট্রেনিংয়ের আয়োজন করা হয়েছে। উল্লেখ্য, মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগের জন্য আগেই সিইও দপ্তরের তরফে কমিশনকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সেই অনুযায়ী বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যদিও এই নিয়োগ ঘিরে কিছু বিতর্কও তৈরি হয়েছে।
সব মিলিয়ে, ভোটার তালিকা সংশোধনের এই গুরুত্বপূর্ণ পর্বে কোনও ত্রুটি রাখতে চাইছে না নির্বাচন কমিশন। শুনানি প্রক্রিয়া কতটা মসৃণভাবে সম্পন্ন হয়, তার দিকেই এখন নজর রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষের।








