নজরবন্দি ব্যুরোঃ লখিমপুর হিংসা কাণ্ডে দ্বিতীয় দিনের শুনানিতেও স্বস্তি পেল না উত্তরপ্রদেশ সরকার। খোদ সরকার পক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টে বলে বসলেন, ‘মনে হচ্ছে এটা খুনের ঘটনাই’। এদিন মামলার শুনানির শুরুতেই প্রধান বিচারপতি এনভি রমণ জানিয়ে দেন, “আমাদের কাছে শতাধিক ই-মেইল এসেছে। আমরা দুই আইনজীবী ও রাজ্যের তরফে হাজির কাউন্সিল ছাড়া কাউকে কথা বলতে দেওয়া হবে না।”
আরও পড়ুনঃ বাজি বিহীন কালীপুজো চাই, কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।
গতকাল, এই মামলার প্রথমদিনে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে এফআইআরের যাবতীয় তথ্য, মৃত আটজন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য় সহ মামলার যাবতীয় গতিপ্রকৃতি নিয়ে একটি রিপোর্ট জমা দিতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই রিপোর্ট জমা করা হয়েছে বলে জানান উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী হরিশ সালভে। তিনি বলেন, “প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে, তবে আগামিদিনে মামলার আরও নানা দিক সামনে আসবে। যার বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাঁর আজই হাজির হওয়ার কথা থাকলেও তাঁকে আগামিকাল সকাল ১১টা অবধি সময় দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, গতকালই পুলিশ লখিমপুরকাণ্ডে অভিযুক্ত দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় কুমার মিশ্রের ছেলে আশীষ মিশ্রকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজিরা দিতে বলা হয়। যদিও আজ মন্ত্রীপুত্র সেই সমন এড়িয়ে গিয়েছেন এবং হাজিরা দেননি। সেই কারনেই তাঁকে আগামিকাল সকাল ১১ টা পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।
মনে হচ্ছে এটা খুনের ঘটনাই, বললেন উত্তরপ্রদেশ সরকারেরই আইনজীবী!
এদিকে উত্তরপ্রদেশ সরকারের আইনজীবী হরিশ সালভের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “এফআইআরে দেখা যাচ্ছে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩০৩ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে বাকি অপরাধীদের মতোই তাঁকেও গণ্য করা হচ্ছে কেন?” জবাবে হরিশ সালভে বলেন, “কৃষকদের ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বুলেটের আঘাতের কোনও প্রমাণ মেলেনি। যেভাবে গাড়িটি চালানো হয়েছিল, তা দেখে মনে করা হচ্ছে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করা উচিত। তবে আমি বলতে চাই যে, মনে হচ্ছে এটা খুনের ঘটনাই।”
তাঁর কথায়, “যতদিন বিচারপ্রক্রিয়া চলছে, ততদিন হয়তো শব্দটি ব্যবহার করলেও যদি প্রমাণগুলি সত্য বলে প্রমাণিত হয়, তবে এটিকে ৩০২ ধারার (খুনের) মামলা হিসাবেই গণ্য় করা উচিত।” এরপর সুপ্রিম কোর্ট জানতে চায়, এই মামলায় সিবিআই তদন্ত হচ্ছে কিনা। তখন উত্তরপ্রদেশের আইনজীবী বলেন, এখনও সরকারের পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি জানানো হয়নি। সব শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৩ অক্টোবর।