নজরবন্দি ব্যুরোঃ উচ্চ প্রাথমিকে কর্মিশক্ষা বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্য ও স্কুল সার্ভিস কমিশনের ভিন্ন মতামত প্রসঙ্গে চাঞ্চল্যকর মন্তব্য করে বসলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। এদিন বিচারপতি বলেন, রাজ্য এবং স্কুল সার্ভিস কমিশনের অবস্থান এক যদি না হয়, তবে কমিশন ভেঙে দেওয়া হোক।
আরও পড়ুনঃ Akhil Giri: অখিল গিরির বিরুদ্ধে আদৌ কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? জানতে চাইল হাই কোর্ট
এদিন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর পর্যবেক্ষণ, ১৯ মের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী রাজ্য জানিয়েছে, হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে বঞ্চিতদের নিয়োগ করতে হবে সেই শূন্যপদে। আবার কমিশন জানাচ্ছে, যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাঁদের জন্য শূন্যপদ। এরপরেই বিচারপতির প্রশ্ন, দুই জনের মতামত একে অপরের থেকে ভিন্ন। এটা কীভাবে সম্ভব? প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
এরপর রাজ্যের আইনজীবীর তরফে জানানো হয়েছে, যাদের ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে, তাঁদের কথা ভেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এমনকি এবিষয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়রাম্যানের সঙ্গে কথা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। সেইসময়েই বিচারপতির মন্তব্য, এই শিক্ষকদের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন চাকরি প্রার্থীরা। এরা অন্য কোথাও কাজ করতে পারলেও শিক্ষক হিসাবে এরা যোগ্য নয়।
এর আগে উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। হাই কোর্টের নির্দেশ, কোনও চাকরি প্রার্থীকে সুপারিশপত্র দিতে পারবে না স্কুল সার্ভিস কমিশন। দুই দিনের জন্য নিয়োগ স্থগিতাদেশ রাখার নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। চাকরি প্রার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে এমনই মন্তব্য করতে দেখা গেছে বিচারপতিকে।

২০১৬ সালে উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরে ২০১৭ সালের জুন মাসে শুধুমাত্র কর্মশিক্ষা বিষয়ে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের মার্চে ইন্টারভিউ হয়। চলতি বছরের অক্টোবরে শারীরিক শিক্ষা এবং কর্মশিক্ষা বিষয়ে অতিরিক্ত পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এসএসসি। এরপরেই নিয়োগ নিয়ে মামলা দায়ের করা হয় কলকাতা হাইকোর্টে।
চাকরি প্রার্থী সোমা রায়ের অভিযোগ, পরীক্ষা এবং পার্সোনালিটি টেস্ট মিলিয়ে ৭২ নম্বর পেয়েছেন তিনি। তপশিলি জাতিভুক্ত হওয়ার পরেও অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২২ এর পরিবর্তে তাঁকে ১৮ নম্বর দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ, তাঁকে অ্যাকাডেমিক স্কোরে নম্বর কম দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর পার্সোনালিটি টেস্টের নম্বর যোগ করা হয়নি।
কমিশন ভেঙে দেওয়া হোক, বেজায় ক্ষুব্ধ বিচারপতি

সোমবার আইনজীবীদের বক্তব্য, এরকম ৬০ জন চাকরি প্রার্থী রয়েছেন, যাদের নম্বর তাঁদের সোমার থেকে কম। এরপরেই প্রতিটি নম্বর ধরে চাকরি প্রার্থীদের সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে চান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। পরে কমিশনের আইনজীবীর যুক্তি মানতে চানননি বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, কোথায় বিশেষ যোগ্যতা রয়েছে ওই প্রার্থীদের? ভৌমিক পদবি তপশিলি জাতিভুক্ত? এ সব করে চাকরি প্রার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে। মন্তব্য বিচারপতির।