নজরবন্দি ব্যুরোঃ বিষেই কি লুকিয়ে রয়েছে বিষক্ষয়ের বীজ? তেমনই ইঙ্গিত দিল বিশেষ প্রজাতির বিষাক্ত গাজর (‘ডেডলি ক্যারট্স’) গাছের দেহে থাকা একটি প্রোটিন। গবেষণাগারে দেখাগিয়েছে, সেই ভেষজ প্রোটিন রুখে দিতে পারে ডেল্টা-সহ করোনাভাইরাসের সব ক’টি রূপ (‘ভেরিয়্যান্ট’) ও প্রজাতি (স্ট্রেন)-র সংক্রমণ।
আরও পড়ুনঃ পুরভোটে শক্তি পরীক্ষা, জোট ভেঙে ১৩০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের
বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে উতরে গেলে এই ভেষজ প্রোটিন আগামী দিনে কোভিড চিকিৎসায় নতুন ওষুধ আবিষ্কারের পথ খুলে দিতে পারে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘ভাইরুলেন্স’-এ। গবেষকরা কাজটি করেছেন গবেষণাগারে বিশেষ ধরনের দ্রবণে কৃত্রিম ভাবে তৈরি করা কোষের উপর। যাকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলা হয় ‘কালচার্ড সেল’।
গাজর গাছের বিশেষ একটি প্রজাতি, যা ডেডলি ক্যারট্স নামে পরিচিত, তাদেরই দেহে থাকে এই বিশেষ ধরনের প্রোটিন। যার নাম ‘থ্যাপ্সিগারগিন’। গত ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্র দেখিয়েছিল এই প্রোটিন কোষে ভাইরাসকে ঢুকতে দেয় না।
মূল গবেষক ব্রিটেনের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কিন-চাও চাং বলেছেন, ‘‘বিষয়টি দেখার জন্য কোভিডে সংক্রমিত হয়নি এবং সংক্রমিত হয়েছে এমন দু’ধরনের কালচার্ড কোষেই দেওয়া হয়েছিল ভেষজ প্রোটিন থ্যাপ্সিগারগিন। দেখা গিয়েছে, করোনার সব ক’টি রূপ ও প্রজাতিকে রুখে দেওয়ার ক্ষেত্রে ৯৫ শতাংশ সফল হয়েছে এই ভেষজ প্রোটিন। এমনকি যখন করোনার দু’টি রূপ একই সঙ্গে সংক্রমণ ঘটাচ্ছে (যেমন, আলফা-বিটা, আলফা-ডেল্টা বা বিটা-ডেল্টা) তখনও তাদের অবলীলায় রুখে দিতে পারছে থ্যাপ্সিগারগিন।’’
করোনার ত্রাস বিষাক্ত গাজর, জানালেন বিশেষজ্ঞরা
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, করোনাভাইরাসের নিত্যনতুন রূপের খবর জানা যাচ্ছে। তাই এই ভেষজ প্রোটিন সেই নতুন রূপগুলি রুখতেও কতটা কার্যকর হচ্ছে তা দেখতে হবে। চালাতে হবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও। কারণ এই প্রোটিনটি নেওয়া হয়েছে বিষাক্ত প্রজাতির একটি গাজর গাছ থেকে। তাই এর কোনও ক্ষতিকর প্রভাব মানবদেহে পড়তে পারে কি না, তাও পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।