নজরবন্দি ব্যুরোঃ ফের জুলুমের অভিযোগ উঠল পুলিশের বিরুদ্ধে। গভীর রাতে রাস্তায় ঘুরলেই ধরবে পুলিশ, দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা। হ্যাঁ, ঠিকই দেখেছেন। গভীর রাতে বাড়ি ফিরছিলেন এক দম্পতি। তাদেরকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হল। কারণ কি শুধু রাতের রাস্তায় ঘোরা? কলকাতার পর এবার অভিযগের ঘটনা বেঙ্গালুরুতে। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে চাঞ্চল্য। গভীর রাতে হেঁটে বাড়ি ফেরার জন্য বড় শাস্তি পেতে হল এক দম্পতিকে।
আরও পড়ুনঃ মেডিক্যাল কলেজে আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে সাক্ষাৎ চন্দ্রিমার, নিয়ে এলেন মমতার বার্তা
অভিযোগ, মাঝরাতে রাস্তায় ‘হাঁটার অপরাধে’ এক দম্পতিকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা করেন পুলিশকর্মীরা। পরে অবশ্য ১ হাজার টাকায় বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়া হয়। কিন্তু রাতের রাস্তায় দুজন প্রাপ্তবয়স্ক হাঁটতে পারবেন না, এমন নিয়ম কোথায় আছে? এই প্রশ্নেই তোলপাড় শুরু কর্নাটক-সহ দেশের নানা প্রান্তে। খবর ছড়াতেই তদন্ত শুরু করা হয়। যে থানা এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে সেই সমপিঘেয়াল্লি পুলিশ স্টেশনের হেড কনস্টেবল ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, প্রথমে ওই দম্পতিকে জরিমানা বাবদ ৩ হাজার টাকা ধার্য করেছিলেন ওই দুই পুলিশকর্মী। কিন্তু সেই টাকা দিতে অস্বীকার করেন। পরে জরিমানা বাবদ ১ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হন পত্রী দম্পতি। অভিযোগ, জরিমানার টাকা নেওয়ার পাশাপাশি দম্পতির একটি মোবাইলও ছিনিয়ে নিয়েছে দুই পুলিশকর্মী। মর্মান্তিক এই ঘটনা সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন ভুক্তভোগী কার্তিক পত্রী। জরিমানার টাকা না দিলে, ওই দুই পুলিশ কর্মী ভয়ঙ্কর পরিণতির হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বলেও জানান তিনি।
হইচই শুরু কার্তিক পাত্রি নামে এক যুবক ট্যুইট ঘিরে। বেঙ্গালুরু সিটি কমিশনার অফ পুলিশের সাহায্য় চেয়ে তাঁদের ভোগান্তির কথা ট্যুইট করেন কার্তিক। এমন কোনও নিয়মের কথা তাঁরা জানতেন না সেটিও স্পষ্ট লিখেছেন কার্তিক। এদিকে রাতবিরেতে অশান্তি বাড়াতে না চেয়ে নম্রভাবে ‘ক্ষমা’ চান পুলিশকর্মীদের কাছে। তারপরেও কিছু সুভল হয়নি। অভিযোগ, তাঁদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা জরিমানা চাওয়া হয়।
I would like to share a traumatic incident my wife and I encountered the night before. It was around 12:30 midnight. My wife and I were walking back home after attending a friend’s cake-cutting ceremony (We live in a society behind Manyata Tech park). (1/15)
— Karthik Patri (@Karthik_Patri) December 9, 2022
কার্তিকের লেখায়, ‘বুঝতেই পারছিলাম কোনও নিরীহ মানুষকে আটকে অর্থ বের করার ছক ছিল ওঁদের। আমরা স্রেফ ওঁদের খপ্পরে পড়ে গিয়েছি। যতই ওঁদের অনুনয়-বিনয় করছিলাম, ততই ওঁরা খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি গ্রেফতারির হুমকিও দেন।’ বিপদ ভেবে তখন কাঁদতে শুরু করে দিয়েছেন কার্তিকের স্ত্রী। এই অবস্থায় হয়তো অন্য কোনও প্রমাদ গুণেছিলেন অভিযুক্তরা, ধারণা যুবকের। তাঁর মতে, কোনও মহিলাকে হেনস্থার অভিযোগে ফেঁসে যাওয়ার ভয়ে তাঁরা সুর নরম করেন।
গভীর রাতে রাস্তায় ঘুরলেই ধরবে পুলিশ, দিতে হবে মোটা অঙ্কের জরিমানা
কার্তিককে আলাদা ডেকে বলেন, ১ হাজার টাকা দিলেই বিষয়টি মিটে যাবে। অত টাকা সেই সময় নগদ ছিল না দম্পতির কাছে। শেষমেশ PayTM QR code-র মাধ্যমে টাকা মেটান তাঁরা, দাবি দম্পতির। গোটা বিষয়টি যে ভাবে ট্যুইটারে তাঁরা পোস্ট করেছেন, তাতে পুলিশের তরফ থেকে ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে কার্তিককে। সঙ্গে আশ্বাস, অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হবে। এবং এই ধরনের ঘটনা আগামী দিনে যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তারজন্য পুলিশকে সতর্ক করে দেন ডিএসপি অনুপ শেট্টি।