ফ্রেব্রুয়ারির মাঝামাঝিই জারি হতে পারে ভোটের বিজ্ঞপ্তি

নজরবন্দি ব্যুরো: ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি জারি হতে পারে ভোটের বিজ্ঞপ্তি। জানুয়ারিতেই আসতে পারে নির্বাচন কমিশনের গোটা টিম। সেক্ষেত্রে এপ্রিলের মধ্যেই ভোটপর্ব শেষ করার চেষ্টা করা হবে। আজ প্রকাশিত হচ্ছে রাজ্যের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। তবে এরপরেও ভোটে নাম তোলা বা সংশোধনীর কাজ চলবে। এই মুহূর্তে রাজ্যের মোট নির্বাচনী বুথের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯০৩টি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, করোনা পরিস্থিতিতে সেই বুথের সংখ্যাই ১ লক্ষ পেরিয়ে যেতে পারে। মঙ্গলবার বিকেলেই উপনির্বাচন কমিশনার এসে রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে কড়া বার্তা দেন। গত বিধানসভা ভোটে রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট হয়েছিল ৬ পর্যায়ে, শুরু হয় ২০১৬-র ৪ এপ্রিল, শেষ হয় ৫ মে। ১৭ এপ্রিল হয় দ্বিতীয় দফার ভোট, ২১ তারিখ তৃতীয় দফা, ২৫-এ চতুর্থ, ৩০-এ পঞ্চম এবং ৫ মে ষষ্ঠ দফার ভোট হবে। ১ মাসের বেশি সময় ধরে চলে নির্বাচন, ভোট গণনা হয় ১৯ মে। ৭৭২৪৭ পোলিং বুথে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন সাড়ে ৬ কোটিরও বেশি ভোটার। ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার পরই চালু হয়ে যায় আদর্শ আচরণবিধি।
২০১১-য় বিপুল জয়ের পর ২০১৬-য় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে তাদের ক্ষমতা আরও দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। ২৯৩টি আসনে লড়ে তারা জেতে ২১১টি আসন, ২০১১-র থেকে ২৭টি বেশি। গতবার শাসক দলের বিরুদ্ধে জোট বেঁধে লড়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট। এবারেও সেই জোট হচ্ছে কিন্তু তাদের কার্যত পিছনে ঠেলে দিয়ে সরকারের প্রতিস্পর্ধী মুখ হিসেবে উঠে এসেছে বিজেপি, ২০১৬-য় যারা মাত্র ৩টি আসন পায়। সাধারণ মানুষ তো বটেই, সরকারপক্ষও মেনে নিয়েছে, এবারের ময়দান আগের বারের মত তেমনটা মসৃণ নয়। তাই লড়াইটা হবে হাড্ডাহাড্ডি। বামফ্রন্টের পর এবার রাজ্যে তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ জানাতে জায়গা করে নিয়েছে বিজেপি। গত লোকসভা নির্বাচনের ৭ শতাংশ ভোটার ধরে রাখাই এখন তাদের প্রধান চেষ্টা। আর রাজ্যের ক্রমবর্ধমান অনুপ্রবেশ সমস্যা, শাসক দলের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু তোষণের গুরুতর অভিযোগ, আমফানের সময় একাধিক দুর্নীতি ও আরও নানা ইস্যুকে সামনে রেখে হু হু করে বিজেপির উত্থান হয়েছে। তাদের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ একাধিকবার এ রাজ্যে ঘুরে গিয়েছেন, গ্রামের মানুষের বাড়ি গিয়ে খেয়েছেন, আবার আসবেন শিগগিরই, মতুয়াদের সঙ্গে সিএএ নিয়ে কথা বলতে। ঘুরে গিয়েছেন বর্তমান সভাপতি জে পি নাড্ডাও, তাঁরও আবার এ রাজ্যে আসার কথা। আসতে পারেন বিজেপি সুপ্রিমো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। আজই দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির দায়িত্বপ্রাপ্ত পদাধিকারীদের সঙ্গে অমিত শাহের বৈঠক, আলোচনা হবে আগামী বিধানসভা ভোটে বিজেপির ঘুঁটি সাজানো নিয়ে। এর মধ্যে বিজেপি নিজেদের দিকে টেনে নিয়েছে তৃণমূলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখ শুভেন্দু অধিকারীকে। দলদলের জল্পনা বাড়িয়েছে শতাব্দীকে ঘিরেও।
ফ্রেব্রুয়ারির মাঝামাঝিই জারি হতে পারে ভোটের বিজ্ঞপ্তি , তবে শান্তিপূর্ণ ভোটের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনও তাঁদের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত। তাই এখন থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। ইতিমধ্যেই বিজেপির অভিযোগ, তাদের ১০০-র বেশি কর্মীকে খুন করেছে তৃণমূল, গত পঞ্চায়েত ভোটেও তুমুল অশান্তি হয়েছে। আশঙ্কা, এবারের বিধানসভা ভোটও একই পথে হাঁটতে পারে, পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্যে নাকি ইতিমধ্যেই আসতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী।
গতকালই দু’দিনের সফর সেরে দিল্লি চলে যান ডেপুটি ইলেকশন কমিশনার। সূত্রের খবর, এ মাসের শেষের দিকে রাজ্যে আসতে পারে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। আর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে ভোটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে এপ্রিলের মধ্যে বাংলায় বিধানসভার ভোটপর্ব শেষ করার চেষ্টা করা হবে।