বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়
বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়

অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়, একতরফা ভাবে জিতেছে বিজেপি। আজ ত্রিপুরায় পুরসভা নির্বাচনের ভোট গণনার শুরু থেকেই বঙ্গ মিডিয়া দেখাতে শুরু করে, প্রথমবার ভোটে লড়েই বিজেপি কে কড়া টক্কর দিয়েছে তৃণমূল। রাজ্যের প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে উঠে এসেছে বাংলার শাসক দল। টিমটিম করে জ্বলছে বামেরা। বঙ্গ মিডিয়ার বক্তব্য কে ঠিক মিথ্যে বলা না গেলেও বিকৃত বলাই যায়। কেউ অবশ্য চাইলে অর্ধসত্যও বলতে পারেন।

আরও পড়ুনঃ “সবে তো শুরু এবার আসল খেলা হবে”, ত্রিপুরা নিয়ে ট্যুইট অভিষেকের

সাত সকাল থেকেই বাংলার মেইন স্ট্রিম মিডিয়ার হেডলাইন দেখে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত এরাজ্যের তৃণমূল সমর্থকরা। বাংলার সীমানা পেরিয়ে ভিনরাজ্যেও এবার ক্ষমতা দখলের পথে ‘প্রিয়’ দিদির দল। কিন্তু বাস্তব কি বলছে? তৃণমূল ঠিক কত ভোট পেয়েছে? বামেরাই বা কত? কংগ্রেস? প্রশ্ন অনেক কিন্তু উত্তর পাওয়া যাচ্ছিল না। কারন নির্বাচন কমিশন সঠিক পরিসংখ্যান দিতে সময় নিচ্ছিল। ঠিক যেমন অবস্থা বিজেপির।

শুরুতে বিজেপির কথাতেই আসা যাক। কিছুটা এরাজ্যের বিগত পঞ্চায়েত নির্বাচনের জেরক্স কপির মতই ত্রিপুরায় ভোট গ্রহনের আগেই এগিয়ে গিয়েছিল উন্নয়ন। ২০টি পুরসভার ৩৩৪টি আসনের মধ্যে ১১২টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় শাসকদল বিজেপি। হ্যাঁ ভোট গ্রহনের আগেই। ত্রিপুয়ার সন্ত্রাসের ছবি বাংলার সংবাদমাধ্যমও দেখিয়েছে, তবে স্বাভাবিক ভাবেই মিথ্যে না বলে অর্ধ সত্য দেখানো হয়েছে।

যখনই সন্ত্রাসের ছবি দেখা গেছে, তখনই দেখা গেছে হামলা হচ্ছে তৃণমূল নেতা কর্মীদের ওপর। কিন্তু বাস্তবটা যে শুধু তা ছিলনা তা ত্রিপুরা বাসী বিলক্ষন জানে। তথ্য বলছে ৫টি পুরসভা ও ২টি নগর পঞ্চায়েতে বাম প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্রই জমা দিতে দেয়নি বিজেপি শিবির। সহযোগিতায় অবশ্যই প্রশাসন। কার্যত বাংলার জেরক্স কপিতে ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের জয় হয়েছে বিপ্লব দেবের! যার ফলে পাঁচটি পুরসভা – বিশালগড়, উদয়পুর, মোহনপুর,রানিরবাজার, সান্তিরবাজার, এবং কমলপুরে ভোট গ্রহনের আগেই বোর্ড গঠন করার পর্যায়ে পৌঁছে যায় গেরুয়া শিবির। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করে কমলপুর ও জিরানিয়া নগর পঞ্চায়েতেও।

বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়

বাংলার জেরক্স কপিতে ত্রিপুরায় গণতন্ত্রের জয়
বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়

ত্রিপুরার মোট ৩৩৪ টি আসনের মধ্যে বিজেপি সব কটিতে মনোনয়ন জমা দিলেও বামেরা জমা দিতে সক্ষম হয় ২২২ টি আসনে। অন্যদিকে তৃণমূল মনোনয়ন জমা দেয় ১২৫ টি আসনে। আর কংগ্রেস জমা দেয় ১০১ টি আসনে। নির্বাচন কমিশনের পরিসংখ্যান বলছে, যে ২২২ টি আসনে নির্বাচন হয়েছে তাঁর মধ্যে বিজেপি জয় পেয়েছে ২১৭ টি আসনে। বাকি ৫টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট ৩ টি এবং তৃণমূল ও তিপ্রা মথা ১ টি করে আসন। বিপুল ভাবে জিতে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেছেন, এই জয় গণতন্ত্রের জয়। যদিও ‘নিন্দুক সিপিআইএম’ বলছে, বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে ত্রিপুরায়!

বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়
বাংলার জেরক্স কপিতে গণতন্ত্রের জয় ত্রিপুরায়

এদিকে ব্যাপক রিগিং ও বুথ লুঠের অভিযোগ সহ সুপ্রিম কোর্টের অসন্তোষের পর যে ত্রিপুরা পুরনিগম ও নগর নির্বাচন হয়েছে তার ভোট প্রাপ্তির পরিসংখ্যান বলছে, পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তিন নম্বরেই! নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, বিজেপি সারা রাজ্যে পেয়েছে ৬০% ভোট। বামফ্রন্ট পেয়েছে ১৯.৯৯ শতাংশ। তৃণমূল কংগ্রেস ১৬.৬৮% ভোট পেয়েছে। আর কংগ্রেস ২.০৭% ভোট পেয়েছে। তৃণমূলের এই ১৬ শতাংশ ভোট প্রাপ্তির সিংহ ভাগই রয়েছে আগরতলা পুরনিগমের ১৩ টি ওয়ার্ডে। যে ১৩ টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, যার মধ্যে ৫ টি যায়গায় বামফ্রন্টের কোন প্রার্থী ছিলনা। বাকি ৩৮ টি ওয়ার্ডে দ্বিতীয় হয়েছে বামফ্রন্ট!