29th ডিসেম্বর, 2025 (সোমবার) - 3:25 অপরাহ্ন
17 C
Kolkata

উন্নাও ধর্ষণ – প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের জামিন বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট

দিল্লি হাই কোর্টের জামিনের রায়ে স্থগিতাদেশ, সিবিআইয়ের আবেদনে সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেল কুলদীপ সেঙ্গারের মুক্তির চেষ্টা

নজরবন্দি ডিজিটাল ডেস্ক

উন্নাও ধর্ষণ মামলায় বড়সড় মোড়। দিল্লি হাই কোর্টের জামিনের নির্দেশে আপাত স্বস্তি পেলেও শেষ পর্যন্ত তা স্থগিত করল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট দিল্লি হাই কোর্টের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করায় প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গার-এর জামিন কার্যত বাতিল হয়ে গেল। নির্যাতিতার নিরাপত্তা ও বিচারপ্রক্রিয়ার গুরুত্বকে সামনে রেখেই এই অন্তর্বর্তী নির্দেশ বলে মনে করছেন আইনজীবী মহল।

এ দিন শুনানিতে সিবিআই স্পষ্ট জানায়, উন্নাও ধর্ষণ মামলায় দোষী সাব্যস্ত এক প্রভাবশালী ব্যক্তিকে জামিন দিলে নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। সেই যুক্তিতেই দিল্লি হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। শুনানি শেষে দিল্লি হাই কোর্ট-এর জামিন সংক্রান্ত নির্দেশে স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে উন্নাওয়ে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার সময় নির্যাতিতা নাবালিকা ছিলেন। অভিযোগের তীর ছিল বাঙ্গেরমউ কেন্দ্রের তৎকালীন বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গার ও তাঁর সঙ্গী শশীর দিকে। ২০১৮ সালের ১৩ এপ্রিল তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এর কিছু দিনের মধ্যেই বিজেপি তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে। পুলিশের চার্জশিটের ভিত্তিতে পকসো আইনে ১২০বি (ষড়যন্ত্র), ৩৬৩ (অপহরণ), ৩৬৬ (অপহরণ ও বিবাহের জন্য বাধ্য করা), ৩৭৬ (ধর্ষণ)-সহ একাধিক ধারায় মামলা চলে। বিচার শেষে আদালত কুলদীপ সেঙ্গারকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শোনায়।

নিম্ন আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাই কোর্টে যান কুলদীপ। গত মঙ্গলবার হাই কোর্ট ১৫ লক্ষ টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে তাঁর সাজা মকুব করে জামিন মঞ্জুর করে। একই সঙ্গে শর্ত দেওয়া হয়—উন্নাওয়ের নির্যাতিতার বাড়ির পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে প্রবেশ করা যাবে না এবং পরিবারের সঙ্গে কোনও ধরনের যোগাযোগ বা হুমকি দেওয়া যাবে না। তবে হাই কোর্টের নির্দেশের পরেও তিনি তৎক্ষণাৎ জেলমুক্ত হচ্ছিলেন না। কারণ, নির্যাতিতার বাবার মৃত্যুর ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মামলায় সাজা এখনও বহাল রয়েছে। সেই সাজা চ্যালেঞ্জ করে কুলদীপের আবেদন দিল্লি হাই কোর্টে বিচারাধীন।

হাই কোর্টের জামিনের রায় ঘোষণার পরেই ইন্ডিয়া গেটের বাইরে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন নির্যাতিতা ও তাঁর মা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ও শুভানুধ্যায়ীরাও। নির্যাতিতা প্রকাশ্যে বলেন, কুলদীপ মুক্তি পেলে তাঁদের প্রাণনাশের আশঙ্কা রয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “আমার বাবাকে খুন করানো হয়েছে, স্বামীকে মিথ্যা মামলায় জেলে পাঠানো হয়েছে। এ বার আমার জীবন বিপন্ন।” সেই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন—এমন একজন দোষী যদি জামিন পান, তবে সাধারণ মানুষ কী ভাবে নিরাপদ থাকবে?

এই পরিস্থিতিতেই সিবিআই দ্রুত সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে জামিন খারিজের আবেদন জানায়। শীর্ষ আদালতের স্থগিতাদেশে আপাতত সেই আশঙ্কা কিছুটা হলেও কমল বলে মনে করছেন নির্যাতিতার আইনজীবীরা। মামলার পরবর্তী শুনানিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।

সবচেয়ে আগে সঠিক খবর, প্রতি মুহুর্তে। আমাদের ফলো করুন
Google News Google News

সদ্য প্রকাশিত

Discover more from Najarbandi | Get Latest Bengali News, Bangla News, বাংলা খবর

Subscribe now to keep reading and get access to the full archive.

Continue reading