নতুন বছরের আগমনে বাংলার আবহাওয়ায় শীতের ধার আরও তীব্র। ভোর থেকে ঘন কুয়াশা, সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমের হাওয়ার দাপট—হাড়কাঁপানো ঠান্ডায় জবুথবু শহর থেকে গ্রাম। এই আবহে পর্যটকদের জন্য সুখবর, বর্ষবরণের রাতে উত্তরবঙ্গের উঁচু পার্বত্য এলাকায় তুষারপাতের ক্ষীণ হলেও সম্ভাবনা। তবে প্রশ্ন একটাই—এই শীতে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গ কবে স্বস্তি পাবে?
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে, সোমবার সকালে কলকাতা-য় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ১৩.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে—স্বাভাবিকের থেকে ০.৩ ডিগ্রি কম। রবিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২১.৪ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪ ডিগ্রি কম। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ৫৮ থেকে ৯১ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় শহরের রাতের তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রির আশপাশেই থাকবে বলে পূর্বাভাস।

তবে এর পরেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত। আবহাওয়া দফতরের মতে, ২৪ ঘণ্টা পর থেকে কলকাতার তাপমাত্রা ধীরে ধীরে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। কারণ হিসেবে জানানো হয়েছে, জম্মু–কাশ্মীরে সক্রিয় পশ্চিমী ঝঞ্ঝা এবং ৩০ ডিসেম্বর উত্তর-পশ্চিম ভারতে নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝা ঢোকার সম্ভাবনা। এর প্রভাবে উত্তর-পশ্চিমের শীতল হাওয়ার গতি কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে, ফলে পারদ ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার ইঙ্গিত।

দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিমের জেলাগুলিতে রাতের তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি থাকতে পারে। উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ থেকে ১৬ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করবে। কুয়াশার দাপট থাকবে সর্বত্র, বিশেষ করে ভোরের দিকে।
বর্ষবরণের রাতে উত্তরবঙ্গে আবহাওয়ার নাটকীয় ছবি। দার্জিলিংয়ের উঁচু পার্বত্য এলাকা—সান্দাকফু ও চটকপুরে হালকা তুষারপাতের সামান্য সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। দার্জিলিং-এ পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে হালকা বৃষ্টিও হতে পারে। সিকিমেও তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কালিম্পংয়ে শীতের বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যেখানে তাপমাত্রা ৪ থেকে ৬ ডিগ্রির মধ্যে নামতে পারে।


উত্তরবঙ্গের জেলাগুলির জন্য জারি হয়েছে ঘন কুয়াশার সতর্কতা। দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, মালদহ, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরে দৃশ্যমানতা নেমে যেতে পারে মাত্র ৫০ মিটার পর্যন্ত, যা যান চলাচলে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
শুধু বাংলা নয়, দেশের একাধিক রাজ্যেই শীতের দাপট। দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় ও উত্তরাখণ্ডে শৈত্যপ্রবাহের সতর্কতা জারি হয়েছে। দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব ও হরিয়ানা-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় ঘন কুয়াশা পরিস্থিতি আরও জটিল করতে পারে। অন্য দিকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি এবং ৩৫–৪০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর।









