দিল্লির বাতাসে দূষণের মাত্রা ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছনোয় আজ, বৃহস্পতিবার থেকেই কার্যকর হল একগুচ্ছ কঠোর নিয়ম। গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান বা GRAP-এর স্টেজ ৪ চালু রেখে রাজধানীতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে কড়া সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন।
নতুন নির্দেশ অনুযায়ী, পলিউশন আন্ডার কন্ট্রোল (PUC) সার্টিফিকেট না থাকলে কোনও গাড়িকেই আর পেট্রোল বা ডিজেল দেওয়া যাবে না। সমস্ত পেট্রোল পাম্পকে এই নির্দেশ মানতে বলা হয়েছে। গাড়ি চিহ্নিত করতে ব্যবহার করা হবে অটোমেটিক নাম্বার প্লেট রেকগনিশন (ANPR) ক্যামেরা এবং ভয়েস অ্যালার্ট সিস্টেম।

একই সঙ্গে আজ থেকে BS-6 মানের নীচে থাকা কোনও প্রাইভেট গাড়ি দিল্লিতে ঢুকতে পারবে না। এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে রাজধানীর ১২৬টি গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশপথে মোতায়েন করা হয়েছে প্রায় ৫৮০ জন পুলিশকর্মী। বাইরে থেকে ঢোকা গাড়ির উপর কড়া নজরদারি চলবে।
দিল্লি সরকারের দাবি, বাতাসে PM10-এর প্রায় ২০ শতাংশ এবং PM2.5-এর ২৫ শতাংশ দূষণের জন্য দায়ী গাড়ির ধোঁয়া। সেই কারণেই যানবাহন নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী, এই সিদ্ধান্তের ফলে দিল্লি সংলগ্ন গুরুগ্রাম, নয়ডা, গাজিয়াবাদ ও ফরিদাবাদ থেকে প্রায় ১২ লক্ষ গাড়ির প্রবেশ বন্ধ হতে পারে।
শুধু গাড়ি নয়, অফিস-কর্মক্ষেত্রেও কড়াকড়ি জারি হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি অফিসে অন্তত ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ (Work From Home) করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পাশাপাশি স্কুলগুলিকে অনলাইন ও অফলাইন—দুই পদ্ধতিতেই পঠনপাঠনের প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে।
এদিকে, দিল্লির দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে আজ লোকসভাতেও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক না হলে আগামী দিনে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে প্রশাসন—ইঙ্গিত মিলেছে সেখানেই।
সব মিলিয়ে, দিল্লিতে দূষণ মোকাবিলায় এখন কার্যত জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েই এগোচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষকে নিয়ম মানার পাশাপাশি অপ্রয়োজনে গাড়ি ব্যবহার না করারও আবেদন জানানো হয়েছে।








