নজরবন্দি ব্যুরো: ঠাসা কর্মসূচির ভিড়েও মুখ্যমন্ত্রীর কল্যাণে পুজো দিলেন অভিষেক। চারদিনের সফরে উত্তরবঙ্গ পৌঁছেছেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে রয়েছে ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। ৪৮ ঘন্টায় দফায় দফায় মোট ২৮টি সাংগঠনিক বৈঠক করবেন তাঁরা। গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তাঁদের বৈঠক। তবে তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষ্যে এদিন আলিপুরদুয়ারে তোর্সা কালী মন্দিরে পুজো দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পরে সার্কিট হাউসে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। খতিয়ে দেখবেন বিধানসভাওয়াড়ি দলের সাংগঠনিক অবস্থাও।
আরও পড়ুনঃ চলতি মাসেই ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু ভারতে,গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
পাহাড়ের মন বুঝতে এবং সংগঠনের হাল বুঝতে এই সফর। গতকাল ২২ জন নেতাকে নিয়ে উত্তরকন্যায় বৈঠক করেন তিনি। নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে গোষ্ঠীকোন্দল বন্ধে কড়া বার্তা দেন তিনি। আজ, কাল কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে কর্মিসভা রয়েছে তাঁর। চারদিনের সফরে ঠাসা কর্মসূচি রয়েছে অভিষেকের। ২১ এর নির্বাচনকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে শাসক দল। এক ইঞ্চিও বিজেপি অর্থাৎ তাঁদের ‘বী’ টিমকে ছাড়তে নারাজ তাঁরা।
তাই উত্তরবঙ্গ সফরে ঘন ঘন দেখা যাচ্ছে শাসকদলের হেভিওয়েট নেতাদের। এর আগে দু’দুবার মুখ্যমন্ত্রী সেখানে সভা করেছেন। কিন্তু এবার লড়াইয়ের ময়দানে নেমেছেন ‘ভাইপো’ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। যদিও এখনও শাসক দল ছেড়ে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখাচ্ছেন অনেকেই। সুতরাং দলের ভাঙ্গন অব্যাহতই রয়েছে। তবে হাল ছাড়ছে না সংগ্রামী নেত্রী তথা রাজ্যের শাসক দলনেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
সোমবার বিকেলে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । সেখান থেকে উত্তরকন্যায় যান। ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে পাহাড় সফরে অভিষেক। সফরের প্রথম দিনেই সন্ধে থেকে কমপক্ষে চার ঘণ্টা ধরে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক সারেন অভিষেক। প্রথমে শিলিগুড়ি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক ছিল। উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী গৌতম দেব, জেলা তৃণমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার, জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি কুন্তল রায়, জেলা মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত-সহ আরও অনেকে। ওই বৈঠক শেষে দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি এবং কোচবিহারের যুব তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অভিষেক।
সূত্রের খবর, সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা থেকে যাতে একজনও বঞ্চিত না হন, সে বিষয়ে নজর রাখার নির্দেশ দেন। পাহাড়ের কোনও প্রত্যন্ত এলাকায় সরকারি কর্মীরা পৌঁছতে না পারলেও তৃণমূল কর্মীরা যাতে সেখানে এগিয়ে যান, সেই নির্দেশও দিয়েছেন অভিষেক। বিরোধীদের কুৎসা রুখতে উন্নয়নমূলক কাজকেই হাতিয়ার করার কথাও বলেছেন তিনি।
ঠাসা কর্মসূচির ভিড়েও মুখ্যমন্ত্রীর কল্যাণে পুজো দিলেন অভিষেক। উল্লেখ্য লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে সেভাবে ভাল ফল করতে পারেনি তৃণমূল। মোদি ম্যাজিকে বেশ কিছু আসন হাতছাড়া হয়েছিল। তবে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ওই আসনগুলি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা এড়াতে সংগঠনকে নিয়ে ভোটের রণকৌশল স্থির করতেই অভিষেকের উত্তরবঙ্গ সফর বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।