নজরবন্দি ব্যুরোঃ আর কত প্রজন্ম চলবে কর্মক্ষেত্রে সংরক্ষন, প্রশ্ন খোদ দেশের শীর্ষ আদালতের। চাকরি ও শিক্ষাক্ষেত্রে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য সংরক্ষণ প্রথা আর ঠিক কতদিন চলবে সেই প্রশ্ন করল খোদ সুপ্রিমকোর্ট। প্রসঙ্গত এই আসন সংরক্ষণ নিয়ে অসংরক্ষিতদের বিরোধিতা বহুদিনের। শীর্ষ আদালতের প্রশ্নে তাদের বিরোধীতা আরও জোর পেলো বলেই মনে করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে মারাঠাদের জন্য চাকরি এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে ১৬ শতাংশ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করে বিল পাশ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুনঃ প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ, বিজেপি নেতার বাড়ি ভাঙচুর সিঙ্গুরে।
সেই সংরক্ষণের বিলকেই চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতেই এই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। আজ সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চের বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন ৫ সদস্যের বেঞ্চ আজ জানায় যদি এভাবে আসন সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা ৫০ শতাংশের বেশি হয়ে যায় বা আদৌ কোন ঊর্ধ্বসীমা না থাকে তাহলে সংবিধান অনুযায়ী সকলের সমান অধিকারের বিষয়টি লঙ্ঘিত হয়। এর পেছনের কারণ হিসেবে তাঁরা বলেছেন ‘স্বাধীনতার পরে ৭০ বছর পেরিয়ে গেল অথচ আমাদের কি মানতে হবে, পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর শ্রেণির কোনও উন্নয়ন হয়নি। কেন্দ্রের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজ্যগুলিও উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালাচ্ছে। তাও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির কোনও উন্নয়ন হয়নি এটা আমাদের মানতে হবে?’
প্রসঙ্গত ১৯৯৩ সালে ইন্দিরা সহায় মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী সংরক্ষণের ঊর্ধ্বসীমা ৫০ শতাংশ পেরনো চলবে না। এক্ষেত্রে, শিক্ষা এবং চাকরি ক্ষেত্রে মারাঠাদের ১৬ শতাংশ ধরলে ঊর্ধ্বসীমা পেরিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে আজ এই মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী মুকুল রোহতগি যুক্তি দেন, প্রসঙ্গত, ১৯৩১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে সেই সময় মণ্ডল কমিশন পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর শ্রেণির জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে এবং চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণের বিষয়টি তৈরি করে। সময়ের সাথে সাথে দেশের জনগণনাও বেড়েছে সুতরাং এবার নতুন জনগণনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হোক সংরক্ষণের বিষয়টি। রোহতগির আরও সংযোজন, ১৯৩১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে আগের রায়টি দেওয়া হয়েছিল। এখন পরিস্থিতি বদলাচ্ছে তাই এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের তা পুনর্বিবেচনা করা উচিত।’
আর কত প্রজন্ম চলবে কর্মক্ষেত্রে সংরক্ষন, প্রশ্ন খোদ দেশের শীর্ষ আদালতের। তবে বিচারপতিরা তাঁর এই যুক্তি মানেননি। এখন দেখার শীর্ষ আদালত এই মামলায় কি রায় দেয়। আসন সংরক্ষণের এই বহুদিনের ধারায় কি আদৌ কোনদিন পরিসমাপ্তি আসবে এই প্রশ্ন উঠছে বারবার।