বাংলার আসন্ন নির্বাচনে জোট রাজনীতির পথে না হেঁটে একক লড়াইয়ের দিকেই এগোতে চায় প্রদেশ কংগ্রেস। নবগঠিত পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রথম বৈঠক থেকেই সেই বার্তাই স্পষ্ট ভাবে উঠে এল। শুক্রবার বিধান ভবনে আয়োজিত এই বৈঠকের মাধ্যমে কার্যত রাজ্যে কংগ্রেসের আনুষ্ঠানিক নির্বাচন প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে গেল।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কংগ্রেস পর্যবেক্ষক গোলাম মির। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ সভাপতি শুভঙ্কর সরকার, প্রাক্তন সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য-সহ কমিটির ৪০ জনের বেশি সদস্য।
জোট প্রসঙ্গে স্পষ্ট মত প্রদেশ নেতৃত্বের
বৈঠকে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আসন্ন ভোটে কংগ্রেসের রণনীতি নিয়ে সদস্যদের মতামত জানতে চান গোলাম মির। আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসে জোট প্রসঙ্গ। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী) বা তৃণমূল কংগ্রেস—কোনও পক্ষের সঙ্গেই জোটে যাওয়ার পক্ষে মত দেননি অধিকাংশ সদস্য। বরং প্রায় সর্বসম্মত ভাবেই ‘একলা লড়াই’-এর পক্ষে সওয়াল করা হয়।
সূত্রের খবর, গোলাম মির বৈঠকে জানান, প্রদেশ কংগ্রেসের এই একক লড়াইয়ের প্রস্তাবই অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি-র কাছে পাঠানো হবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক মাসগুলিতে কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে যে রিপোর্ট তৈরি হয়েছে, সেটিও হাইকমান্ডকে জানানো হবে।
২৯৪ আসনে প্রার্থী দেওয়ার প্রস্তুতি
প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব আগেই ২৯৪টি বিধানসভা আসনেই প্রার্থী দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছিল। সেই অবস্থানেই অনড় রয়েছে রাজ্য নেতৃত্ব। সূত্র অনুযায়ী, গোলাম মির নিজেও এই কৌশলের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। ফলে নির্বাচনী প্রস্তুতির শুরুতেই একক লড়াইয়ের প্রস্তাব হাইকমান্ডের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
আরও জানা গিয়েছে, গোলাম মির বৈঠকে স্পষ্ট করে দিয়েছেন—বাংলায় জোট নিয়ে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। তারা প্রদেশ নেতৃত্বের মতামতই জানতে চেয়েছে। একই সঙ্গে সিপিএম বা তৃণমূলের তরফে কংগ্রেসকে জোটের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়নি।
রাহুল গান্ধীর বাংলা সফরের প্রস্তাব
বৈঠকে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উঠে এসেছে—বাংলায় রাহুল গান্ধী-কে আনার। প্রদেশ নেতৃত্ব মনে করছে, নির্বাচনের আগে রাজ্যে রাহুলের উপস্থিতি কর্মীদের মনোবল বাড়াবে এবং সংগঠনকে চাঙ্গা করবে।
এর মধ্যেই শনিবার রানি রাসমণি রোডে ‘সহস্র কণ্ঠে সংবিধান পাঠ’ কর্মসূচি রয়েছে কংগ্রেসের। প্রদেশ নেতৃত্ব আশা করছে, এই কর্মসূচিতে বড় জমায়েত হবে এবং তা থেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ের প্রাথমিক বার্তা স্পষ্ট হবে।
সব মিলিয়ে, জোটের অঙ্ক থেকে বেরিয়ে বাংলায় নিজেদের শক্তিতে ভোটের ময়দানে নামার দিকেই যে কংগ্রেস এগোচ্ছে, পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার্স কমিটির বৈঠক তারই স্পষ্ট ইঙ্গিত দিল।








