বাংলাদেশে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতা ও সহিংসতার আবহে সামনে এল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র একটি অডিয়ো বার্তা। ভার্চুয়াল বক্তৃতার অংশ হিসেবে প্রকাশিত এই অডিয়োটি কবে রেকর্ড করা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বক্তব্যে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তাঁর কড়া অভিযোগ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ইঙ্গিত রয়েছে।
এই অডিয়োটি শনিবার প্রকাশ করেন হাসিনা সরকারের প্রাক্তন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী মোহাম্মদ আলি আরাফাত। রবিবার সেটির লিঙ্ক সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করেন হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। ফলে বার্তাটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন না থাকলেও, সময়কাল নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।
লক্ষ করার মতো বিষয়, সাম্প্রতিক কয়েক দিনে সংবাদমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ কিংবা ধানমন্ডিতে ভাঙচুরের মতো ঘটনাগুলির কোনও উল্লেখ এই বক্তৃতায় নেই। সেই কারণেই অডিয়োটি সাম্প্রতিক না কি আগের, তা নিয়ে জল্পনা চলছে।
বক্তৃতায় শেখ হাসিনা সরাসরি বর্তমান প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর অভিযোগ, মুহাম্মদ ইউনূস-এর নেতৃত্বে দেশ ধ্বংসের পথে এগোচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে, দুষ্কৃতীদের হাতে সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হচ্ছেন, অথচ সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা নিচ্ছে—এমনই দাবি তাঁর।
হাসিনার আরও বক্তব্য, গোটা দেশে আওয়ামি লিগ-এর সমর্থক এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের উপর লাগাতার হামলা চলছে। খুন, হুমকি ও দমননীতির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, এই পরিস্থিতি রাষ্ট্রের ভিত্তিকেই নড়বড়ে করে দিচ্ছে।

অর্থনৈতিক প্রসঙ্গেও কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর দাবি, তাঁর আমলে চার কোটিরও বেশি মানুষ দারিদ্রসীমার উপরে উঠে এসেছিলেন। কিন্তু বর্তমান শাসনে সেই অর্জন ধ্বংস হয়েছে এবং প্রায় ছয় কোটি মানুষ নতুন করে জীবিকাহীন হয়ে পড়েছেন।
সবশেষে শেখ হাসিনার কণ্ঠে শোনা যায় প্রত্যয়ী বার্তা। তিনি বলেন, “আল্লা যখন আমাকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন, তখন আবার আমি ফিরব।” তাঁর দাবি, তিনি ফিরে এসে নতুন, সোনার ও স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের কাজ শুরু করবেন।
এই অডিয়ো বার্তা প্রকাশের পর রাজনৈতিক মহলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বক্তব্যের সময়কাল ও প্রেক্ষাপট স্পষ্ট না হলেও, বাংলাদেশের চলমান অস্থির বাস্তবতায় এর রাজনৈতিক তাৎপর্য যে গভীর, তা অস্বীকার করার উপায় নেই।









