নজরবন্দি ব্যুরোঃ সব হার্ট অ্যাটাকে বুকে ব্যথা হয় না, সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক নিয়ে চিকিৎসকরা সবসময় ভয়েই থাকেন। কারণ এই ধরনের হার্ট অ্যাটাকের সমস্যাকে সাধারণ মানুষ তেমন পাত্তা দেন না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনও সমস্যা দেখা না দেওয়ায় তা উড়িয়ে দেন। এক্ষেত্রে বহু মানুষ হার্ট অ্যাটাকের সমস্যাকে সাধারণ পেট ব্যথা, বুক জ্বালা, গ্যাসের সমস্যা বলে মনে করেন। এমনকী কেউ কেউ ভাবেন টেনশন করার জন্য দেখা দিচ্ছে এই সমস্যা। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুনঃ ‘উফ! কী ছবি!’, মির্জাপুরের ডিম্পি পণ্ডিতের ফটোশ্যুট রাতের ঘুম উড়াল ভক্তদের
যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি কিংবা যাঁদের স্থূলতার সমস্যা রয়েছে, তাঁদের হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। হার্ট অ্যাটাক যে কোনও বয়সে, যে কোনও সময়ে হতে পারে। কারও হার্ট অ্যাটাক হলে প্রতি সেকেন্ডই সে সময়ে গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়, ততই মঙ্গল।

অনেক সময় বড়সড় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আগে ছোট করে একটা আভাস দিয়ে যায় শরীর। এই সমস্যার নাম সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক (Silent Heart Attack)। এই হার্ট অ্যাটাক চিনে রাখতে পারলেই সমস্যা থাকবে দূরে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। আসুন জানা যাক।
চিকিৎসকরা কিন্তু হার্ট অ্যাটাকের আর একটি ধরন নিয়েও সাবধান বার বার সতর্ক করছেন। তাঁদের মতে, হার্ট অ্যাটাক সব সময়ে যে হঠাৎ হবে, এমনটা নয়। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক’-এরও শিকার হন অনেকে। এই প্রকারের অ্যাটাকে সব রকম উপসর্গ দীর্ঘ সময় ধরে আসে। এই উপসর্গগুলি আমরা অনেক ক্ষেত্রেই অন্য রোগের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলি। অনেক সময়ে এই ধরনের হার্ট অ্যাটাকে সে ভাবে কোনও ব্যথাও অনুভব করেন না রোগী। কিন্তু ভিতরে ভিতরে ঘটে যায় হার্ট অ্যাটাক।
এক্ষেত্রে সারা শরীরের প্রয়োজন হয় অক্সিজেনের (Oxygen)। এবার গোটা দেহে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে দেওয়ার কাজটি করে হার্ট (Heart)। এবার হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের রক্তনালীতে প্লাক (Plaque) বা কোলেস্টেরল (Cholesterol) জমে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে হার্টের ভিতরে রক্ত জমাটের কারণে ঠিকমতো রক্ত চলাচল (Blood Circulation) হয় না। এই কারণে শরীরে দেখা দিতে পারে মস্ত সমস্যা। এক্ষেত্রে হার্ট নিজের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে শুরু করে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই হার্ট অ্যাটাক নিয়ে সতর্ক হতে হবে।
এমন হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ কী? – হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত, পুরুষদের তুলনায় মহিলারাই এই ধরনের রোগের শিকার হন বেশি। এই ধরনের হার্ট অ্যাটাকে বুকে চাপ, ব্যথা, এগুলি মাঝেমাঝে আসে। আবার সেরেও যায়। আমরা ভেবে বসি হজমের সমস্যা। কিন্তু মাঝেমাঝে বুকে চিনচিনে ব্যথা সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম লক্ষণ।

সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাকের নানা লক্ষণ
- মাথা ভার হয়ে যাওয়া। অনেক সময় মাথা তোলাও সম্ভব হয় না।
- বুকে চাপচাপ অনুভূতি হয়। শ্বাস নিতেও কষ্ট হতে পারে।
- শরীর অস্থির হয়ে ওঠে।
- হঠাৎ করেই ঘাম বেরতে শুরু করে।
- দৃষ্টি ঝাপসা গয়ে যায়। শরীর হঠাৎ করে খুব খারাপ হয়ে যেতে পারে।
- হাতে ব্যথা হওয়া সম্ভব। এমনকী চোয়ালেও যন্ত্রণা হয়।
চিকিৎসকদের মতে, বুকের বাঁ দিকে ব্যথা তো বটেই, অনেক সময়ে গোটা বুক জুড়েই চাপ ও অস্বস্তি অনুভব করেন রোগী। অনেক সময়ে বুকের পেশিতেও টান পড়ে, সঙ্গে শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা যায়। খুব অল্পেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, সামান্য শারীরিক কাজেই হাঁপাতে দেখা যায়। এমনকি, এক জায়গায় বসে থেকেও ক্লান্তি আসতে পারে এমন অবস্থায়।
হার্ট অ্যাটাকের সঙ্গে কেবল বুকের সম্পর্ক আছে, এমন ধারণা ভুল। হাত, ঘাড়, কাঁধে ব্যথা হতে পারে হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ। পেট, এমনকি, চোয়ালে ব্যথা হলেও অবহেলা করবেন না। এই অস্বস্তিগুলির মুখোমুখি হলেই দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। নিয়মিত স্বাস্থ্য সচেতন থাকুন। নিয়ম করে শারীরিক কসরত ও ডায়েটের মধ্যে থেকে সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করুন।
সব হার্ট অ্যাটাকে বুকে ব্যথা হয় না, কিভাবে বুঝবেন লক্ষণগুলি কি কি?

কী করবেন এই সময়:- শরীর উপরিউক্ত কোনও লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। কোনও অপেক্ষা নয়, সরাসরি পৌঁছে যান চিকিৎসকের কাছে। এভাবেই আপনি সমস্যাকে আগেই ধরে ফেলতে পারবেন। আর সবথেকে ভালো কথা হল, সাইলেন্ট হার্ট অ্যাটাক প্রথমেই ধরা পড়ে গেলে বড় সমস্যা থেকে বাঁচা সম্ভব। তাই আর চিন্তা নয়।