নজরবন্দি ব্যুরোঃ রাজ্যপালকে ঘিরে দফায় দফায় স্লোগান-কালো পতাকা শীতলকুচি জুড়ে। ভোট চতুর্থীতে রক্ত ঝরেছে শীতলকুচিতে। তার পর থেকে অনেক জল বয়েছে বাংলার রাজনীতিতে। তৃতীয় বার ক্ষমতায় ফিরেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এসেই নিহতদের পরিবারকে চাকরির প্রতিশ্রুতি এবং আজ থেকে চাকরির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তদন্তের জন্য একে একে তলব করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী থেকে পুলিশ অফিসারকে। তার পর পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আজ শীতলকুচি সফরে গিয়েছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুনঃ নিখোঁজ অমিত শাহ! দিল্লি পুলিশের কাছে মিসিং ডায়রি দাখিল কংগ্রেসের ছাত্র-সংগঠনের
রাজ্যের ভোট চলাকালীন এবং ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি। আগেই জানিয়েছিলেন বাংলা যে হিংসা চলছে, রাজ্যপাল হিসেবে বসে দেখতে পারবেন না। নিজে যাবেন হিংসা কবলিত এলাকা গুলিতে। যাবেন আসামেও। ফিরিয়ে আনবেন হিংসায় রাজ্য ছাড়া মানুষদের। সেই মতোই আজ শীতল্কুচি গিয়েছেন রাজ্যপাল, ফিরে এসে যাবেন আসামে।
তবে রাজ্যপালের শীতলকুচি পর্যবেক্ষণের মধ্যে একাধিক জায়গায় দেখা গেছে কালো পতাকা, গো ব্যাক স্লোগান। জোড়াপাটকিতে রাজ্যপালে যাওয়ার আগেই গো ব্যাক পোস্টার পড়ে। গোলকগঞ্জে জগদীপ ধনকড়কে দেখানো হল কালো পতাকা। নাগরিক মঞ্চের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ উঠেছে। তবে পরিস্থিতি শান্ত হয় কিছুক্ষণেই। তার পরই বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিককে নিয়ে শীতলকুচিতে ৩ মে মৃত মানিক মৈত্রর বাড়িতে যান রাজ্যপাল। যান একাধিক বিজেপি কর্মীর বাড়িতেও।
উল্লেখ্য রাজ্যপালের এই শীতলকুচি পরিদর্শনকে কেন্দ্র করে তুঙ্গে উঠেছে বাংলায় রাজ্য-রাজ্যপাল দ্বন্দ। তাঁর এই যাত্রা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছিলেন “তাঁর এই সফর দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে চলে আসা প্রথা ও রীতিনীতি লঙ্ঘন করবে।রাজ্য প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের আলোচনা করেই রাজ্যপালের সফরসূচি চূড়ান্ত করা উচিত।” রাজ্যপালের এই পদক্ষেপ রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের ১৯৯০ সালের ম্যানুয়্যাল অব প্রোটোকল অ্যান্ড সেরিমনিয়্যালস-এর পরিপন্থী বলেও সরব হয়েছিলেন তিনি। ।
জবাব দিতে ভোলননি রাজ্যপালও। যার জবাবে শীতলকুচি যাত্রার আগে টুইট করে রাজ্যপাল বলেন “আমি ও আপনি দু’জনই সাংবিধানিক দায়িত্বপ্রাপ্ত। শপথ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সংবিধান মেনে চলতে বাধ্য। আমি জানি আপনি অন্তত সংবিধান মানেন। আর সংবিধান কখনও এড়ানো যায় না। সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের জন্যই আমার জেলা সফর। এরকম একটা সঙ্কটের সময় রাজ্যপাল-সহ প্রত্যেকের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।”
রাজ্যপালকে ঘিরে দফায় দফায় স্লোগান-কালো পতাকা শীতলকুচি জুড়ে, আজ সেখানে যাওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সংবিধান ভাঙার জবাবে পাল্টা চিঠি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন “মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ তিনি যে সংবিধান মেনে শপথ নিয়েছেন, আশা করি সেই শপথবাক্য রক্ষা করবেন। সংবিধানের ১৫৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী আমি আমার সাধ্যমতো চেষ্টা করব সংবিধানের আওতায় থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এই কঠিন এবং অভূতপূর্ব পরিস্থিতিতে চটকদারি করা উচিত নয়। প্রয়োজন একসঙ্গে কাজ করার। এই কঠিন সময় আমাদের সংযম দেখানো উচিত। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করছি, সংবিধানের আওতায় থেকেই আমি মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করব।”