নজরবন্দি ব্যুরোঃ রাশিয়া থেকে ১০ কোটি টিকার ডোজ আসছে ভারতে। অপেক্ষা কেন্দ্রীয় অনুমোদনের। দেশের জনগনের ওপর প্রয়োগের জন্য স্পুটনিক ভি ভ্যাকসিনের ছাড়পত্র দিয়েছে রাশিয়া। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের প্রথম ব্যাচ জনসাধারণের প্রয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এক বিবৃতি দিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে নির্মিত ‘গ্যাম-কোভিড-ভ্যাক’ স্পুটনিক ভি সবধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাফল্যের সঙ্গে উতরেছে। পুতিন সরকার আশাপ্রকাশ করছে, আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই বেশিরভাগ দেশবাসীর করোনা-টিকাগ্রহণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়ে যাবে।
আরও পড়ুনঃ রায়নার আত্মীয়দের ওপর হামলা অভিযোগে গ্রেপ্তার তিন জন।
প্রাথমিক ভাবে টিকা দেওয়া হবে করোনা যোদ্ধা এবং সংক্রামিত এলাকায়। এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হবে দেশের কোনে কোনে। এই পরিস্থিতিতে ভারতেও রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক ভি আসার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল। রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্ট ফান্ড (আরডিআইএফ) জানিয়েছে, ভারতের অন্যতম ফার্মা কোম্পানি ডক্টর রেড্ডি’স ল্যাবকে টিকার ডোজ বেচতে চলেছে তাঁরা। ভ্যাকসিন বিতরণের দায়িত্বে থাকা আরডিআইএফ জানিয়েছে আপাতত ১০ কোটি টিকার ডোজের জন্য রেড্ডি’স-এর সঙ্গে চুক্তি করতে পারে গ্যামেলিয়া ইন্সটিউট।
রাশিয়া থেকে ১০ কোটি টিকার ডোজ আসছে ভারতে। এই বিপুল টিকা দেশে নিয়ে আসার জন্যে ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোল ও ভ্যাকসিন রেগুলেটরির অনুমতি প্রয়োজন। অনুমতি মিললে তবেই ভারতে আসবে রাশিয়ার টিকা। জানা গিয়েছে চূড়ান্ত পরীক্ষা ও নিয়ামক পদক্ষেপগুলি সম্পন্ন হওয়ার পরে রাশিয়া এই বিপুল পরিমান ভ্যাকসিন পাঠাবে ভারতে।
অন্যদিকে দুর্গম এলাকায় পাঠাতে করোনা ভাইরাসের ‘শুকনো’ টিকা আনল পুতিনের দেশ। শুকনো টিকা হল রাশিয়ার তৈরী করোনা ভ্যাকসিন স্পুটনিক ৫ এর একটি অন্য ভার্সান। ফ্রোজেন(সাধারন স্পুটনিক ৫) এর পাশাপাশি টিকার ‘ফ্রিজ ড্রায়েড’ ভার্সান তৈরি করে ফেলেছে রাশিয়া। এই ‘ফ্রিজ ড্রায়েড’ টিকা যেকোন প্রত্যন্ত এলাকায় পাঠানো যাবে।
‘ফ্রোজেন’ ভার্সানের মত মাইনাস টেম্পারেচারে সংরক্ষণ করার হ্যাপা নেই এই টিকার। ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সংরক্ষনই যথেষ্ট। সাধারন থার্মোকলের বাক্সে ভরেই বিদ্যুৎবিহীন এলাকায় পাঠানো যাবে স্পুটনিক ভি-র শুকনো টিকা। যদিও রাশিয়া জানিয়েছে ফ্রোজেন টিকাই ব্যাবহার করা হবে সাধারন ক্ষেত্রে। শুধু দূর্গম এলাকার জন্যে ব্যাবহার করা হবে ‘ফ্রিজ ড্রায়েড’ বা শুকনো টিকা। এই ড্রাই-ভ্যাকসিন ডিসটিলড ওয়াটারের সঙ্গে মিশিয়ে প্রয়োগ করা হবে। এই ভ্যাকসিন কে ডিপ ফ্রিজে মাইনাস ১৮ ডিগ্রি থেকে মাইনাস কুডি ডিগ্রি সেলসিয়াসে বেশ কয়েকমাস মজুত রাখা যাবে।
উল্লেখ্য স্পুটনিক ৫ এর দুই ভার্সান এর দ্বিতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব বন্দিত মেডিক্যাল জার্নাল দ্যা ল্যানসেট ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়। ল্যানসেট জার্নালের রিপোর্ট বলছে, করোনা সামলাতে রাশিয়ার তৈরি ভ্যাকসিনই এখন আশার আলো। প্রথম দফার পরীক্ষায় কোনও স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই অ্যান্টিবডি গঠনে সফল রাশিয়ার টিকা ‘স্পুটনিক ভি’। দ্বিতীয় দফার ট্রায়ালও সফল হয়েছে একই ভাবে। কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেলে ভারতে পৃথকভাবে রাশিয়ার ভ্যাকসিনের এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হতে পারে।