পূজোর আর বাকি ৫৩ দিন, কিন্তু এবারের কুমোরটুলি ছবিটা একেবারেই ভিন্ন।

নজরবন্দি ব্যুরোঃ পূজোর বাকি মাত্র ৫৩ দিন। কিন্তু এবছর কুমোরটুলি গুলোর ছবি অন্যরকম। নেই কোন ব্যস্ততা। আর না দেখা মিলছে মানুষের ভিড়। নিন্মচাপের কারণে কয়েকদিনের একটানা বৃষ্টি কাজেকর্মে আরও কিছুটা ব্যঘাত ঘটিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় প্রতিমার কাঠামো চোখে পড়লেও অন্য বছরের তুলনায় দৃশ্যটা একেবারেই অন্যরকম। ঠাকুর তৈরির কাঠামো সাজানো থাকে কুমোরটুলির রাস্তা। প্রতিমার মূর্তি ছবি তুলতে ভিড় জমতো বিদেশি পর্যটকদের।
আরও পড়ুনঃ প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে রাজ্যে কাল পূর্ণ দিবস ছুটি ঘোষণা রাজ্য সরকারের।
এই বছর কোভিড-১৯ এর জন্য সমস্ত জায়গায় মানতে হচ্ছে একাধিক নির্দেশিকা। মৃৎশিল্পী সমিতির কড়া নির্দেশে কুমোরটুলি পাড়ায় পা রাখতে পারছেন না ছবি প্রেমিরা। সংক্রমণ রুখতে বিদেশি পর্যটকদেরও প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে কুমোরটুলি গুলিতে। করোনা ভাইরাসের দাপটে এবছর মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিয়েছে। প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে সংক্রমিতের সংখ্যা। সেই কারণে অনেক পূজো কমিটি এখনো পর্যন্ত ঠাকুরের বায়না করতে পারেনি। অভিজ্ঞ শিল্পী পশুপতি রুদ্র পাল জানিয়েছেন, অন্য বছর গুলিতে প্রায় ২০ টা বায়না আসে। কিন্তু এবছর তা দাঁড়িয়েছে পাঁচটা। এবং প্রত্যেকেই মূর্তির উচ্চতা কমার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রত্যেক পূজো কমিটির বাজেট প্রায় অর্ধেক গিয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে কাঁচামালের দামে সাথে জিএসটিও দিতে হয়। এবং কারিগরদের পারিশ্রমিকও রয়েছে। সব মিলিয়ে লাফ রাখা দুষ্কর। জোগান নেই দেব-দেবীর অলংকার তৈরি প্রয়োজনীয় জিনিসের। কাটোয়া, কৃষ্ণনগর থেকে আনতে হয় শোলার অলংকার, তারের মুকুট, ডাকের সাজ। কিন্তু ট্রেন বন্ধ এবং পুজির অভাবে টান পরেছে প্রয়োজনীয় জিনিসে। শিল্পী চায়না পাল জানান, দুর্গাপুজোয় লাভের মুখ দেখা যাবে না। একমাত্র পরিচিত ক্রেতাদের থেকেই মূর্তির বরাত নিচ্ছেন তিনি। শীতলা, বাসন্তী প্রতিমার বরাত পেয়েও বিক্রি না হওয়ায় প্রচুর ক্ষতি হয়েছে, তাই অপরিচিতদের থেকে বরাত নিচ্ছেন না তিনি।
অন্যান্য মৃৎশিল্পীরাও একই কথা জানিয়েছেন। আর যে সমস্ত শিল্পীরা কাজ শুরু করেছে তাদের জন্য বাধা হয়ে দাড়িয়েছে বৃষ্টি। বিদেশ থেকে মূর্তির বায়নাও কম এসেছে। সংক্রমণ রুখতে শিল্পীদের বাড়িতে সপ্তাহে দুদিন করে স্যানিটাইজ করে দেওয়া হচ্ছে সমিতি থেকে। সেক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসনও সাহায্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। শিল্পীরা কাজ করছেন স্বাস্থ্যবিধি মেনেই।