নজরবন্দি ব্যুরোঃ তাঁর সরকার পতনের দায় পাক সেনাবাহিনীর! পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ তাঁর সরকারের পতনের দায় চাপালেন পাক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার উপর। নওয়াজের অভিযোগ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে তাদের সরকার ফেলে দিয়ে ইমরান খানের সরকারকে ক্ষমতায় আনার পিছনে প্রধান হাত ছিল বাজওয়ার। শুক্রবার একটি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে লন্ডন থেকে পাকিস্তানের জনতার উদ্দেশে নিজের বার্তা পাঠান নওয়াজ শরিফ।
আরও পড়ুনঃ জানেন, টিকা বিতরণের তালিকায় কাদের নাম আগে থাকবে? দেখে নিন।
একদিকে পাকিস্তানে ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে একজোট হয়েছে বিরোধীরা। দেশজুড়ে বিক্ষোভের পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। তারই প্রথম ধাপ হিসেবে গুজরানওয়ালাতে প্রথম বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দেন বিরোধী দলের সমর্থকরা। আর সেখানেই এই বার্তা প্রকাশ করেন নওয়াজ শরিফ। ভিডিও বার্তায় নওয়াজ বলেন, ‘জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়া, আপনার জন্যই আমাদের সরকারের পতন হয়েছে। আমাদের সরকার খুব ভাল চলছিল। আপনি নিজের ইচ্ছার জন্য দেশের মানুষের ভবিষ্যত্ নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন।’ এমনকি তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জন্য পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইকেও দায়ী করেছেন শরিফ।
সেপ্টেম্বর মাসে ইমরানের দল তেহেরিক ই ইনসাফের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছে পাকিস্তনের ৯টি প্রধান বিরোধী দল। তারা মিলে পাকিস্তান ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট শুরু করেছে। দেশজুড়ে ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছে তারা। গুজরানওয়ালা স্টেডিয়ামে হওয়া এই বিক্ষোভে স্লোগান দেওয়া হয়, ‘ইমরান দূর হটো। তোমার সময় শেষ হয়েছে।’ ২০১৭ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজ শরিফের দল মুসলিম লিগ নওয়াজকে দুর্নীতির দায়ে বরখাস্ত করে।
তারপরেই গত বছর নভেম্বর মাসে চিকিত্সার জন্য লন্ডনে চলে যান নওয়াজ শরিফ। তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনার জন্য সেনাবাহিনির জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নামে অভিযোগ করেছেন তিনি। নওয়াজ শরিফের কন্যা তথা তাঁর রাজনৈতিক উত্তরসুরী মারিয়াম নওয়াজ এবং আর এক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর ছেলে তথা পাকিস্তান পিপলস পার্টির নেতা বিলাওয়াল ভুট্টোও এই বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন। তাঁরা দু’জনেই ইমরান খান সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন। এই সরকারের অধীনে পাকিস্তানের মানুষের আর্থিক ও সামাজিক দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন তাঁরা। এই মুহূর্তে পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা সত্যিই শোচনীয়।
তাঁর সরকার পতনের দায় পাক সেনাবাহিনীর! মুদ্রাস্ফীতি আকাশছোঁয়া। তাই এই অবস্থায় বিরোধীদের দাবি, ইমরান খানের উচিত পদত্যাগ করা। সেইসঙ্গে পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনার হস্তক্ষেপ বন্ধ করারও দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এই অভিযোগের পরে অবশ্য পাক সেনাবাহিনী বা সেনাপ্রধানের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। কেবল বলা হয়েছে পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনারা নাক গলায় না। ২০২৩ সালে পাকিস্তানে আগামী সাধারণ নির্বাচন রয়েছে। যদিও ইমরান খান শুক্রবার জানিয়েছেন, মানুষের সমর্থনেই তিনি ক্ষমতায় এসেছেন।
এর পিছনে সেনাবাহিনীর কোনও ভূমিকা ছিল না। বিরোধীদের এই বিক্ষোভকেও তিনি ভয় পান না বলেই জানিয়েছেন। বিরোধী দলের একাধিক নেতাদের বিরুদ্ধে যে দুর্নীতির মামলা রয়েছে সেদিক থেকে মানুষের নজর ঘোরাতেই এই বিক্ষোভ তারা শুরু করেছে, এমনটাই দাবি ইমরানের।