নজরবন্দি ব্যুরোঃ প্রথম দফায় ভোটদান শুরুতেই বিপত্তি বিহারে। ঔরঙ্গাবাদের ঢিবরায় একটি বুথের কাছ থেকে দু’টি ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইডিডি) উদ্ধার হয়েছে। তবে কোনও অঘটন ঘটার আগেই আইডি দু’টি নিষ্ক্রিয় করে দেয় সিআরপিএফ-এর বম্ব স্কোয়াড। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হুলস্থুল বাঁধানোর লক্ষ্যেই সেগুলি রাখা হয়েছিল। তবে এর পিছনে কে বা কারা রয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি।
আরও পড়ুনঃ উৎসবের মধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকারি ও বেসরকারি কর্মীদের জন্য সুখবর আনতে চলেছে কেন্দ্র।
পুলিশ ও আধা সামরিক বাহিনীর পাহারায় সেখানে ভোটদান শুরু হয়েছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত ৭.৩৫ শতাংশ ভোট পড়েছে সেখানে। করোনা আবহে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনে যাতে ভোটদান সম্পন্ন হয়, তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। মোট ২৪৩টি আসনের মধ্যে বুধবার ৭১টি আসনে প্রথম দফার ভোটদান চলছে বিহারে। প্রথমে ঠিক ছিল প্রত্যেক বুথে সর্বাধিক ১৬০০ ভোটার ঢুকতে পারবেন। কিন্তু ভোটারদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে তা কমিয়ে ১০০০ করা হয়েছে। তার জেরে বুথের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩১ হাজার ৩৭১।
ভোটদানের সময়সীমাও ১ ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। সন্ধ্যা ৫টার পরিবর্তে ৬টা পর্যন্ত ভোটদান চলবে সেখানে। করোনা পরিস্থিতিতে ভোট দিতে এসে যাতে সাধারণ মানুষ সংক্রমিত হয়ে না পড়েন, তার জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনগুলিকে (ইভিএম) জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বুথে উপস্থিত সমস্ত ভোটকর্মীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। থার্মাল স্ক্রিনিং, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সাবান এবং জলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বুথে। এ ছাড়াও ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে যাঁদের বয়স, তাঁদের জন্য পোস্টাল ব্যালটের বন্দোবস্তও করা হয়েছে। এ বারের বিধানসভা নির্বাচনে মুখোমুখি নীতীশ কুমার এবং লালুপ্রসাদ যাদবের ছেলে তেজস্বী যাদব।
প্রথম দফায় ভোটদান শুরুতেই বিপত্তি বিহারে। বিজেপির সঙ্গে জোট বেঁধে চতুর্থ বার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন নীতীশ। নির্বাচনী প্রচারে দুর্নীতিমুক্ত বিহার গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়লেও এই প্রথম একাহাতে নির্বাচনের যাবতীয় দায় দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তেজস্বী। নীতীশকে পরাজিত করতে অর্থনীতি এবং বেকারত্বকেই হাতিয়ার করেছেন তিনি। ক্ষমতায় এলে ১০ লক্ষের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ দিন ভোটদান শুরু হওয়ার আগে বিহারবাসীর উদ্দেশে টুইটারে তেজস্বী লেখেন, ‘আজ প্রথম দফায় ভোটদান।
বিহারবাসীর কাছে অনুরোধ, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ, উন্নত শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, কর্মসংস্থান এবং উন্নয়নের কথা মাথায় রেখে নতুন বিহার গঠনের পক্ষে ভোট দিন। মহাজোটের সঙ্গে পরিবর্তনে শামিল হোন’। নীতীশ কুমার লেখেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে ভোটদান শুধুমাত্র অধিকার নয় এক গুরুদায়িত্বও বটে। আজ ৭১টি আসনে ভোটদান। সময় বের করে অবশ্যই ভোট দিতে যান। আপনাদের ভোট বিহারের উন্নয়নে গতি আনবে’। তবে বিজেপিকে সমর্থন জানালেও নীতীশের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন চিরাগ পাসোয়ান। শুরু থেকেই বিজেপিকে নীতীশের সঙ্গ ত্যাগ করতে অনুরোধ জানিয়ে আসছিলেন তিনি।
এ দিন ফের এক বার নীতীশের বিরুদ্ধে মুখ খোলেন তিনি। চিরাগের দাবি, ভোটদান মিটে গেলেই বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে ফের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেডি) হাত ধরবেন নীতীশ। তার প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন তিনি। চিরাগ বলেন, ‘‘নীতীশকে ভোট দেওয়ার অর্থ বিহারের সর্বনাশ ডেকে আনা। ওঁকে ভোট দিলে মহাজোটের হাতই আরও শক্ত হবে। তিনি প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন। ভোটদান মিটে গেলেই বিজেপি ছেড়ে আরজেজি-র সঙ্গে হাত মেলাবেন উনি। আগেও আরজেডি-র সঙ্গে সরকার গড়েছিলেন উনি।’’