নজরবন্দি ব্যুরোঃ রাজ্যের বর্তমান অবস্থা আসিন খান হত্যাকাণ্ড থেকে বাগটুই। বেকার সমস্যা থেকে এসএসসি দুর্নীতি সব ব্যাপারেই আন্দোলন শুরু করেছে সিপিআইএম। খুব সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী কোথায় ? এই প্রশ্ন নিয়ে বুধবার বিকেলে রাজ্য জুড়ে নেমে পড়েছিল সিপিআইএমের কর্মী-সমর্থকরা।
আরও পড়ুনঃ এবার সিবিআই তদন্তের মুখে শোভন, নির্দেশ হাই কোর্টের
ঠিক সেই সময় রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলকে এই নিয়ে সেরকম কোন আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। আর কংগ্রেস তো ধারে কাছেই ছিল না। অথচ বিধানসভা নির্বাচনের ভোটের নিরিখে এর প্রেক্ষিতে আসন সংখ্যার বিচারে সিপিআইএম শূন্য। বাংলার সাধারণ মানুষের কথা বলার জন্য বিধানসভায় সিপিআইএম তথা বামফ্রন্টের কোন প্রতিনিধি নেই। কংগ্রেসের অবস্থাও তাই।
সেই অর্থে বিধানসভায় বিরোধীদল এখন বিজেপি। কিন্তু সরকারের দুর্নীতি নিয়ে সাধারণ মানুষের পক্ষে সেভাবে কোনো বড় আন্দোলন বিজেপিকে এখনো করতে দেখা যায়নি। সেই দিক থেকে বিধানসভায় শূন্য সিট পাওয়া সিপিআইএম অনেকটাই এগিয়েন। ফলে বিধানসভার বছর ঘুরতে না ঘুরতেই নিজেদের অনেকটাই গুছিয়ে নিতে পেরেছে সিপিএম তথা বামফ্রন্ট।
আর তার প্রমান রাজ্যের বিভিন্ন উপনির্বাচন এবং পৌরসভার ভোট। যেমন সম্প্রতি বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছিল। তৃণমূল জেতা আসন জিতেছিল ঠিকই। কিন্তু বিরোধী সিপিএম ভোট বাড়িয়েছিল প্রায় ২০ শতাংশ। এছাড়াও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন সিপিএমের রাস্তায় নেমে আন্দোলন এবং পুরনো জমি ফিরে পাওয়া অনেকটাই নির্ভর করেছে বর্তমান রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিমের জন্য। নতুন রাজ্য সম্পাদক এর কিছু কাজ বামফ্রন্ট কর্মীদের উৎসাহিত করেছে ।
সেলিম যেমন মোটরসাইকেলের পিছনে চড়ে পুলিশি নজরদারি এড়িয়ে পৌঁছেছেন বীরভূমের বগটুই গ্রামে। যেটা কবে কোন নেতা এই দলে করেছেন তা মনে করতে পাচ্ছেন না সমর্থকরা। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা তাই মনে করছেন সেলিম কে রাজ্য সম্পাদক পদে বসানোটা সিপিআইএম এর ক্ষেত্রে রাজনৈতিকভাবে একটা বড় পদক্ষেপ। যা আসলে রাজ্য বামফ্রন্ট তথা সিপিএম কে আলাদা অক্সিজেন দিয়েছে। কারণ রাজনৈতিক বয়স অনুযায়ী সেলিম অপেক্ষাকৃত তরুণ।
এবং তিনি কথাবার্তার বলেন তরুণ প্রজন্মের ভাষায়। তাই তিনি নির্দ্বিধায় পুলিশকে কুকুরের সঙ্গে তুলনা করতে পারেন। আর তা নিয়ে বিতর্ক হলে একটি পা-ও পিছু না-হটে বলেন, ‘‘ঠিকই। ভুল করেছি। এই পুলিশ কুকুরের সঙ্গেও তুলনীয় নয়। এই পুলিশকে কুকুর বললে সেটা কুকুরেরও অপমান!’’ অপর দিকে প্রধান বিরোধী দল নিজের ঘর সামলাতেই ব্যতিব্যস্ত। ভোটের বিপর্যয়ের পর থেকে একের পর এক ওজনদার নেতার তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন, দলের অন্দরে বিভিন্ন শিবিরে বিভাজন এবং নেতৃত্বে রাশ হাতে রাখার অন্তর্দলীয় লড়াইয়ে বিজেপি আপাতত দিশাহারা।
বিধানসভায় ‘শূন্য’ হয়েও সব বিরোধী দলের থেকে আন্দোলনে অনেক এগিয়ে CPIM
অপরদিক প্রদেশ কংগ্রেসের আন্দোলন মুলত প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ব্যক্তি উদ্যোগে বলে মনে হয়েছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। সেটা বাগটুই হোক বা আসিন কাণ্ড। পক্ষান্তরে, কলকাতা পুরনিগম-সহ অন্যান্য পুরসভা এবং বালিগঞ্জে বিধানসভা উপনির্বাচনের ফল সিপিএমের হারানো জমি পুনরুদ্ধারের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা। সেই ‘অক্সিজেন’ পেয়ে দ্বিগুণ উৎসাহে রাস্তা নেমেছে সিপিএম। এবার কি এই পদক্ষেপ আগামী দিনে তাদের পুরনো অবস্থান ফিরে পাবে সিপিএম? বলবে সময়।
