নজরবন্দি ব্যুরো: জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা পালন করা হয়। এটি জগন্নাথদেবের ভক্তদের কাছে একটা বড় উৎসব। জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রার বিগ্রহকে জগন্নাথ মন্দির থেকে বাইরে নিয়ে আসা হয়। মন্দিরের বাইরে তৈরি করা হয় বিশেষভাবে সজ্জিত স্নানমঞ।
আরও পড়ুন: বালেশ্বর বিপর্যয়ে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বিপাকে Agnimitra Paul
ভক্তদের বিশ্বাস এই দিনতেই আবির্ভূত হয়েছিলেন জগন্নাথ দেব। প্রথম মন্বন্তরে ব্রক্ষার পুত্র শ্রীস্বায়ম্ভুব মনু একবার পৃথিবীতে পরমেশ্বর ভগবানের দর্শনের অভিলাষে একটি মহাযজ্ঞ করেছিলেন, সেই যজ্ঞের প্রভাবেই শ্রী জগন্নাথদেবের আবির্ভাব। সেই দিনটি ছিল জৈষ্ঠ্যমাসের পূর্নিমা তিথি।
সেই থেকেই এই বিশেষ দিনটি স্নানযাত্রা হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর দেবস্নান পূর্ণিমায় এই রীতি পালিত হয়। মহাস্নানের আগে অবধি রত্নবেদীতেই থাকেন জগন্নাথ। প্রথমে জগন্নাথ, তারপর বলরাম, শেষে সুভদ্রাকে পুষ্পাঞ্জলি দেন মন্দিরের সেবায়েতরা। তারপর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় স্নানবেদীতে।
সেখানে মঙ্গল আরতি ও সূর্যপুজোর পর তিনজনকে মহাস্নানের জন্য প্রস্তুত করা হয়। মন্দিরের দক্ষিণের দরজায় রয়েছে কুয়ো। সেই কুয়ো থেকে তোলা হয় একশো আট ঘটি জল। সেই জলেই স্নান করেন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা।
স্নানের পর জগন্নাথ ও বলরামের হাতিবেশ বা গণেশবেশ হয়ে থাকে। স্বয়ং জগন্নাথদেব মহারাজা ইন্দ্রদ্যুম্নকে নির্দেশ দিয়েছিলেন মহাস্নানের পর তাঁর অঙ্গরাগবিহীন রূপ যেন কেউ না দেখেন। তাই স্নানযাত্রার পর থেকে ১৫ দিন পুরীর মন্দিরের দরজা সাধারণের জন্য বন্ধ থাকে। এছারাও মনেকরা হয় পূর্ণিমায় স্নান করেছিলেন, তাই এই স্নানের পরেই জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন জগন্নাথ দেব, বলরাম ও সুভদ্রা— তিন ভাইবোনই।
জগন্নাথ দেবের স্নানযাত্রা, কেন পালন করা হয় এই দিন?
এই সময়ে তাঁদের রাজবৈদ্যের চিকিৎসাধীনে আলাদা একটি সংরক্ষিত কক্ষে রাখা হয়। এই সময় ভক্তেরা দেবতার দর্শন পান না। স্নান করে জ্বর এলে ১৪ দিনের জন্য আলাদা একটি ঘরে রাখা হয় তাঁকে। ১৫তম দিনে তিনি সবাইকে দর্শন দেন। তারপর থেকে প্রতি বছর রথযাত্রার আগে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়।