নজরবন্দি ব্যুরো: এক ভারতীয় মহিলাকে ফাঁসির সাজা দিল ইয়েমেন সরকার। মহিলার নাম নিমিশা প্রিয়া। তিনি পেশায় একজন নার্স। কিন্তু কেন নিমিশা প্রিয়াকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিল ইয়েমেনের সর্বোচ্চ আদালত? কী অন্যায় করেছিলেন তিনি? আসুন জেনে নেওয়া যাক।
আরও পড়ুন: বেহাল রাস্তা, নেই অ্যাম্বুল্যান্স, পথেই মৃত্যু রোগীর, ক্ষোভ প্রকাশ সুকান্তর
কেরলের পলক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা প্রিয়া কর্মসূত্রে ইয়েমেনে যান তাঁর স্বামী ও মেয়েকে নিয়ে। ২০১৪ সালে তাঁর স্বামী এবং মেয়ে ভারতে ফিরে আসে। এদিকে ২০১৬ সালে ইয়েমন থেকে যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে ভারত। সেই সময় ইয়েমেনের একটি প্রাইভেট হাসপাতালে কাজ করতেন প্রিয়া। সেখানেই তাঁর পরিচয় হয় তলাত আবদো মেহদির সঙ্গে।
নিমিশা প্রিয়ার ইচ্ছে ছিল, তিনি ইয়েমেনে একটি ক্লিনিক খুলবেন। কিন্তু, বাধ সাধে ইয়েমেনের আইন। কারণ, ইয়েমেনে কোনও বিদেশি নাগরিক যদি ক্লিনিক খুলতে চায়, তাহলে তাঁকে স্থানীয় কারও সঙ্গে পার্টনারশিপে খুলতে হবে। ২০১৫ সালে মেহদির সাহায্যে ক্লিনিক খোলেন প্রিয়া।
কিছু সময়ের মধ্যেই পরে মেহদির সঙ্গে ঝামেলা শুরু হয় প্রিয়ার। মেহদি প্রিয়ার পাসপোর্ট ছিনিয়ে নেন। প্রিয়াকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দিত মেহদি। এছাড়াও নানান ভাবে প্রিয়াকে অত্যাচারও করতেন মেহদি। প্রিয়া এরপর পুলিশের দ্বারস্থ হলে ২০১৬ সালে গ্রেফতার হন মেহদি। অবশ্য মেহদি কিছু দিন পরই ছাড়া পেয়ে যান।

এরপর ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মেহদিকে ঘুম পাড়ানো ইনজেকশন দেন প্রিয়া। উদ্দেশ্য ছিল, নিজের পাসপোর্ট ফিরিয়ে নিয়ে ভারতে ফিরে আসা। কিন্তু সেই ইনজেকশনের ওভারডোজে মৃত্যু হয় মেহদির। প্রিয়া এক বান্ধবীকে সাহায্য নিয়ে মেহদির দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ক্লিনিকের ট্যাঙ্কে ফেলে দেয়। ২০১৮ সালে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন প্রিয়া।
ইয়েমেনে ভারতীয় নার্সকে ফাঁসির নির্দেশ, কারণ জানেন?
২০১৮ সাল থেকে আদালতে লড়াই চালাচ্ছিলেন প্রিয়া। সম্প্রতি, অবশ্য শীর্ষ আদালতে সেই মামলায় হেরে যান প্রিয়া। ভারতীয় এক নার্সের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল রাখে ইয়েমেনের সর্বোচ্চ আদালত। এখন প্রিয়ার পরিত্রাণের একমাত্র উপায় ‘ব্লাড মানি’। অর্থাৎ ইয়েমেনের আইন অনুযায়ী, আক্রান্তের পরিবারকে অর্থ দিয়ে মুক্ত হওয়া। সেক্ষেত্রে প্রিয়ার মাকে ভারত থেকে ইয়েমেনে যাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তাও এই মুহূর্তে সম্ভব হচ্ছে না। কেননা ২০১৬ সাল থেকে ভারতীয়দের ইয়েমেনে যাওয়া নিষিদ্ধ। ফলে, প্রিয়ার ভবিষ্যত কি হবে তা নিয়ে কিন্তু জোর আলোচনা চলছে ওয়াকিবহাল মহলে।