নজরবন্দি ব্যুরোঃ বিজেপি কংগ্রেস থেকে এই মুহুর্তে একে একে নেতা বিধায়করা যোগ দিচ্ছেন তৃণমূলে। ওয়াকিবহাল মহল বলছে একেবারে ২১ এর ভোটের আগের ঘটনার প্রতিচ্ছবি ঘটছে উপনির্বাচনের আগে আগেই। নির্বাচনের আগেই মানুষের জন্য কাজ করতে আর সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে নেতা মন্ত্রীরা ভিড় জমিয়েছিলেন পদ্মবনে।
আরও পড়ুনঃ ফিরহাদের মন্তব্যে কার্যত শিলমোহর সুকান্তর, দল ছাড়তে চলেছেন BJP-র এই ‘বড় নেতা’!
তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের কাজের রীতির বদল ঘটেছে। অন্তত বর্তমানে তাঁদের মনোভাবনা দেখে তাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল গিলি। এই মুহুর্ত সকলেই আবার তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উহেছেন, লক্ষ্য একতাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে কাজ করবেন বাংলার মানুষের জন্য। প্রয়োজনে লাইন দিচ্ছেন, দলনেত্রীর গ্রিণ সিগন্যালের জন্য অপেক্ষা করছেন।
২১ এর বিধানসভা ভোটে ২৯২ আসনের লড়াইয়ে বিজেপির ঝুলিতে গিয়েছিলেন ৭৭ বিধায়ক, দিনে দিনে কমছে সেই সংখ্যা। তৃণমূলের তরফে বারবার বলা হয়েছে লাইনে আছেন বহু জন…এখন অপেক্ষা শুধুই সময়ের। একে একে ঘুঁটিও পড়ছে। মুকুল রায়, বিষ্ণুপুরের বিধায়ক থেকে বাগদার বিধায়ক সকলেই তৃণমূলে ভিড়েছেন। বহু জল্পনা অপেক্ষার পরে ঘাসফুল শিবিরে এসছেন বাবুল সুপ্রিয়ও। আজ কংগ্রেস থেকে অভিষেকের হাত ধরে এসেছেন মইনূল।
বিজেপি বিধায়কদের লম্বা লাইন তৃণমূল যোগের জন্য! অভিষেক বলছেন তৃণমূল দরজা খুললে BJP দলটাই উঠে যাবে
তার মধ্যেই দিনভর চর্চায় ফিরহাদ হাকিমের ‘বিজেপি থেকে বড়ো কেউ’ আসার কথা। বাবুল সুপ্রিয়কে দলে স্বাগত জানিয়েই ভবানীপুরে প্রার্থী মমতার প্রচারে গিয়ে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক জানিয়েছিলেন, খেলা শুরু হয়েছে সবে, আরও বড়ো চমক আসতে চলেছে বাংলার রাজনীতিতে। সেই সুর ধরেই আজ রাজ্যের পরিবহন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ‘যারা তৃণমূল ছেড়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের অনেকেই ফিরে এসেছেন। কিন্তু কয়েকদিন বাদে এমন একটা নাম আসবে, চিন্তা করতে পারবেন না। বিজেপি থেকেই তিনি আসবেন তৃণমূল। এমনকি অনেক বিধায়কও আসছেন, আরও আসবেন।’
ফিরহাদের এই মন্তব্যের পর কয়েক ঘন্টাতেই এক প্রকার শোরগল পড়েছে রাজনীতির অন্দরে। সারপ্রাইজ পার্সনকে নিয়ে ফিরহাদ মুখে কিছু না বললেও, সূত্রের দাবি এই ‘বড় নেতা’ হলেন শুভেন্দুর অধিকারীর গড় পূর্ব মেদিনীপুর ময়নার বিজেপি বিধায়ক অশোক দিন্দা। তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দিয়েছে। এদিকে গেরুয়া শিবির যতই বলুক এসবে কর্ণপাত করছেন না তাঁরা, জল্পনা উস্কে দিয়েছে কয়েকগুন খোদ বিজেপির রাজ্য সভাপতির কথায়।
নব নিযুক্ত সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, ‘যারা নীতি-আদর্শের ভিত্তিতে বিজেপি করেন, তারা কেউ দল ছেড়ে যাবেন না। সেই বিষয়ে আমি নিশ্চিত। তবু, যাদের সমস্যা হচ্ছে, তাঁদের বলব যে কোনও রাগ-ক্ষোভ থাকলে আসুন, আলোচনা করুন দলের মধ্যে। আমি মনে করি, আলোচনার মাধ্যমে সব করা সম্ভব। একসাথে লড়াই করব সবাই। আর এই সরকারকে উৎখাত করা শুধু সময়ের অপেক্ষা।’ যখন কলকাতা ছাড়িয়ে রাজ্য রাজনীতি জুড়ে এই আলচনা সাড়া ফেলেছে তখন মুর্শিদাবাদে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “বিজেপির অনেকে আমাদের দলে আসার জন্য পা বাড়িয়ে আছেন। বলেছিলাম, ভোটের পর খেলা শুরু হবে। আমরা দরজা খুলে দিলে বিজেপি দলটাই উঠে যাবে।’
মুর্শিদাবাদে তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে গিয়ে এক সঙ্গে কংগ্রেস, বিজেপিকে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। নাম না করে অধীর চৌধুরিকে কটাক্ষ করার পাশাপাশি গেরুয়া শিবিরকে নিশানা করে বলেছেন, “রাজনৈতিক লড়াইয়ে আমাদের সঙ্গে পেরে ওঠে না। তখন এজেন্সি লেলিয়ে দেয় আমাদের ভয় দেখাতে। কিন্তু কোনও ভয় দেখিয়ে, ধমকে-চমকে আমাদের মাথা নত করা যাবে না। বরং আমরা আরও মাথা উঁচু করে দাঁড়াব।” একই সঙ্গে বহিরাগত তত্ব তুলে এনে বলেছেন, ”বহিরাগতদের বাংলায় কোনও স্থান নেই। আগামী ৩ বছরের মধ্যে বহিরাগতদের উৎখাত করবই।”